দূরাগত শিক্ষার (Distance Education) সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্যগুলি

দূরাগত শিক্ষা হল এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক শারীরিকভাবে একই স্থানে থাকে না। এই শিক্ষা ব্যবস্থায়, শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মাধ্যম যেমন টেলিভিশন, রেডিও, ইন্টারনেট, ইমেল, ইত্যাদি ব্যবহার করে শিক্ষকের কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করে।

দূরাগত শিক্ষার সংজ্ঞা

দূরাগত শিক্ষার সংজ্ঞা বিভিন্নভাবে দেওয়া হয়েছে।

ব্রিটিশ দূরশিক্ষা সংস্থা (British Open University)-এর মতে, দূরশিক্ষা হল এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে শিক্ষার্থীরা শারীরিকভাবে শিক্ষকের কাছ থেকে দূরে অবস্থান করে, কিন্তু শিক্ষকের সাথে যোগাযোগ করে শিক্ষা গ্রহণ করে।

আবার, জাতীয় দূরশিক্ষা সংস্থা (National Distance Education Association)-এর মতে, দূরশিক্ষা হল এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের কাছ থেকে দূরে অবস্থান করে, কিন্তু শিক্ষকের নির্দেশনা অনুসরণ করে এবং শিক্ষকের কাছ থেকে মূল্যায়ন লাভ করে।

ড. আর. কে. আচার্য দূরাগত শিক্ষাকে “শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের মধ্যে শারীরিক দূরত্বের কারণে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষার সাথে সাদৃশ্যহীন যে কোনও শিক্ষাকে দূরাগত শিক্ষা বলে।”

আবার, ড. জি. পি. কাঞ্জু দূরাগত শিক্ষাকে “শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের মধ্যে শারীরিক দূরত্বের কারণে যে শিক্ষা ব্যবস্থায় শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের অভাব থাকে তাকে দূরাগত শিক্ষা বলে।”

উপরোক্ত সংজ্ঞাগুলি থেকে আমরা বলতে পারি যে, দূরাগত শিক্ষা হল এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা যেখানে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক শারীরিকভাবে একই স্থানে থাকে না, কিন্তু শিক্ষার্থীরা শিক্ষকের কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করে এবং শিক্ষকের কাছ থেকে মূল্যায়ন লাভ করে।

দূরাগত শিক্ষার বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ:

  • শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক শারীরিকভাবে একই স্থানে থাকে না।
  • শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে শিক্ষকের কাছ থেকে জ্ঞান অর্জন করে।
  • শিক্ষার্থীরা স্ব-শিক্ষিত হয়।
  • শিক্ষার্থীরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে শিখে।
  • শিক্ষার্থীরা সময় এবং স্থানের সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করতে পারে।
  • শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বয়স, পেশা এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থানের হতে পারে।

দূরাগত শিক্ষার সুবিধাগুলি হল:

  • শিক্ষার্থীরা যেকোনো সময় এবং যেকোনো স্থানে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
  • শিক্ষার্থীরা তাদের নিজের গতিতে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে।
  • শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব সুবিধামত সময় এবং স্থানে পরীক্ষা দিতে পারে।
  • শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন বয়স, পেশা এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থানের হতে পারে।

দূরাগত শিক্ষার অসুবিধাগুলি হল:

  • শিক্ষার্থীদের স্ব-শিক্ষিত হতে হয়।
  • শিক্ষার্থীদের শিক্ষকের সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগের সুযোগ কম থাকে।
  • শিক্ষার্থীদের শিক্ষকের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা পাওয়া কঠিন হতে পারে।
  • শিক্ষার্থীদের শিক্ষাগ্রহণের খরচ বেশি হতে পারে।

বাংলাদেশে দূরাগত শিক্ষার ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আজকাল বিভিন্ন ধরনের দূরশিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং কর্মসূচি চালু রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান এবং কর্মসূচিগুলির মাধ্যমে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীরা দূরশিক্ষার সুযোগ গ্রহণ করছে।

Leave a Comment