ASCII (American Standard Code for Information Interchange) হল একটি কোডিং সিস্টেম যা কম্পিউটার এবং অন্যান্য ডিভাইসগুলির মধ্যে তথ্য বিনিময়ের জন্য ব্যবহৃত হয়। এটি মূলত অক্ষর এবং বিভিন্ন প্রতীককে সংখ্যার মাধ্যমে উপস্থাপন করে, যাতে কম্পিউটার এগুলিকে সহজে চিনতে এবং প্রক্রিয়াকরণ করতে পারে। ASCII কোডটি ৭-বিটের সংখ্যা ব্যবহৃত করে, যার ফলে 128টি ভিন্ন অক্ষর এবং প্রতীক চিহ্নিত করা সম্ভব হয়। এর মধ্যে আছে ইংরেজি বর্ণমালা, সংখ্যা, এবং কিছু বিশেষ চিহ্ন।
ASCII কোডের ইতিহাস
ASCII কোডের উদ্ভব 1960 এর দশকে হয়। তখনকার সময়ে বিভিন্ন কম্পিউটার সিস্টেমের মধ্যে তথ্য বিনিময়ের জন্য একটি সাধারণ মানের প্রয়োজন ছিল। ASCII কোডের মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান করা হয়। এটি প্রথমে 1963 সালে তৈরি হয় এবং 1968 সালে এটি সর্বজনীন মান হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
ASCII কোডের গঠন
ASCII কোডের মধ্যে 128টি ভিন্ন চরিত্র রয়েছে। এর মধ্যে প্রথম 32টি কোড নিয়ন্ত্রণ চিহ্ন (control characters) এর জন্য সংরক্ষিত, যেমন নতুন লাইন (newline), ট্যাব (tab), এবং কার্সর মুভমেন্ট। বাকি 96টি কোড প্রিন্টেবল চরিত্রের জন্য ব্যবহৃত হয়, যা নিম্নলিখিত শ্রেণীতে বিভক্ত:
- অক্ষর: A-Z, a-z
- সংখ্যা: 0-9
- বিশেষ চিহ্ন: !, @, #, $, %, ^, &, *, (, ), etc.
ASCII এবং ইউটিএফ-8
বর্তমানে, ASCII কোডের সীমাবদ্ধতা অনুভব করা হয়েছে, বিশেষত আন্তর্জাতিক অক্ষর সমর্থনের জন্য। তাই UTF-8 এর মত আধুনিক কোডিং সিস্টেমগুলি তৈরি করা হয়েছে, যা ASCII এর উপর ভিত্তি করে এবং আরও বেশি চরিত্র সমর্থন করে। UTF-8 এর মাধ্যমে বিভিন্ন ভাষার অক্ষর সহজেই ব্যবহার করা যায়।
ASCII কোডের ব্যবহার
ASCII কোডের ব্যবহার এখনও অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়। বিশেষ করে প্রোগ্রামিং, ডেটাবেস, এবং নেটওয়ার্ক প্রটোকলে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ASCII ফাইল ফরম্যাটগুলি, যেমন টেক্সট ফাইল, এখনও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় যেহেতু সেগুলি সহজে পড়া এবং সম্পাদনা করা যায়।
উপসংহার
ASCII কোড তথ্য প্রযুক্তির একটি মৌলিক উপাদান। এটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেক ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এর সহজ গঠন এবং আন্তর্জাতিক মানের কারণে, এটি আজও প্রযুক্তি দুনিয়ায় অপরিহার্য। ASCII কোডের মাধ্যমে আমরা সহজেই তথ্য বিনিময় করতে পারি, যা আমাদের কাজকে আরও সহজ করে তোলে।