IQ, বা “Intelligence Quotient,” হচ্ছে একটি মানসিক দক্ষতার পরিমাপ, যা সাধারণত মানুষের বুদ্ধিমত্তার স্তর নির্ধারণ করতে ব্যবহৃত হয়। এটি বিভিন্ন ধরনের মানসিক পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারিত হয়, যেখানে যুক্তিবিজ্ঞান, সমস্যা সমাধান, ভাষা দক্ষতা এবং গাণিতিক ক্ষমতা পরীক্ষা করা হয়।
IQ-এর ইতিহাস ও প্রয়োগ
IQ পরীক্ষার ইতিহাস ১৯শ শতাব্দীর শুরুতে শুরু হয়। ফ্রেঞ্চ মনোবিজ্ঞানী আলফ্রেড বিনেট প্রথম IQ পরীক্ষার ধারণা প্রবর্তন করেন। তিনি স্কুলে শিশুর বুদ্ধিমত্তা নির্ধারণের জন্য একটি পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। এই পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুদের শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা বোঝা যায় এবং তাদের জন্য উপযুক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব হয়।
IQ কিভাবে মাপা হয়?
IQ পরীক্ষা সাধারণত কিছু নির্দিষ্ট প্রশ্ন ও সমস্যার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এই পরীক্ষাগুলি বিভিন্ন বিভাগে বিভক্ত হতে পারে, যেমন:
- যুক্তিবিজ্ঞান: যুক্তি ও বিশ্লেষণী চিন্তা
- ভাষা দক্ষতা: শব্দ জ্ঞান ও ভাষার ব্যবহার
- গাণিতিক ক্ষমতা: সংখ্যা ও গণনার সমস্যা সমাধান
- সামাজিক দক্ষতা: সামাজিক পরিস্থিতিতে আচরণ ও সম্পর্ক
IQ-এর মান ও এর গুরুত্ব
IQ স্কোর সাধারণত ১০০-এর চারপাশে হয়, যেখানে ১২০ বা তার উপরে স্কোর একজন উচ্চ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ব্যক্তি নির্দেশ করে। যদিও IQ একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক দক্ষতার পরিমাপক, তবে এটি মোট বুদ্ধিমত্তার পুরো ছবিটি উপস্থাপন করে না।
IQ-এর সীমাবদ্ধতা
IQ পরীক্ষার কিছু সীমাবদ্ধতা আছে। যেমন:
- এটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পরিবেশগত ফ্যাক্টর বিবেচনা করে না।
- বুদ্ধিমত্তার বিভিন্ন ধরনের (যেমন: সৃজনশীলতা, আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা) মূল্যায়ন করে না।
- কিছু মানুষ পরীক্ষার চাপের কারণে তাদের প্রকৃত সক্ষমতা প্রদর্শন করতে পারে না।
উপসংহার
IQ একটি গুরুত্বপূর্ণ মানসিক দক্ষতার পরিমাপক হলেও এটি মানুষের পুরো বুদ্ধিমত্তার একটি অংশ মাত্র। এটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাকে বিবেচনায় নেয় না। তাই, কোন ব্যক্তির সামগ্রিক মূল্যায়নের জন্য IQ-এর পাশাপাশি অন্যান্য দক্ষতাও মূল্যায়ন করা উচিত।