জিংক আছে যেসব খাবারে, জিংকের ঘাটতির লক্ষণ, এবং প্রতিদিন কি পরিমাণ জিংক শরীরে প্রয়োজন
জিংক সমৃদ্ধ খাবার
জিংক একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ খনিজ যা শরীরের বিভিন্ন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত করতে সাহায্য করে। জিংক সমৃদ্ধ কিছু প্রধান খাবার নিম্নে উল্লেখ করা হলো:
- মাংস: বিশেষ করে গরুর মাংস, মুরগির মাংস, এবং ভেড়ার মাংসে প্রচুর পরিমাণ জিংক থাকে।
- সমুদ্রজাত খাদ্য: শেলফিশ, যেমন ঝিনুক, কাঁকড়া, এবং লবস্টারে উচ্চমাত্রার জিংক পাওয়া যায়।
- ডেইরি প্রোডাক্টস: দুধ, পনির, এবং দইয়ে জিংকের ভালো উৎস।
- বাদাম ও বীজ: কুমড়ার বীজ, তিলের বীজ, এবং কাজু বাদামে জিংক প্রচুর পরিমাণে থাকে।
- শস্য: গমের ভূষি, ওটস, এবং অন্যান্য শস্য জিংক সরবরাহ করে।
- ডিম: ডিমের কুসুম জিংকের একটি ভালো উৎস।
- লেগিউমস: মসুর ডাল, ছোলা, এবং শিমে জিংক পাওয়া যায়।
- পালং শাক ও অন্যান্য সবুজ শাকসবজি: এসব শাকসবজিতেও কিছু পরিমাণে জিংক থাকে।
জিংকের ঘাটতির লক্ষণ
জিংকের অভাব হলে শরীরে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিচে জিংকের ঘাটতির কিছু প্রধান লক্ষণ উল্লেখ করা হলো:
- ইমিউনিটি কমে যাওয়া: শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া।
- ত্বকের সমস্যা: ত্বকের শুষ্কতা, র্যাশ, এবং অন্যান্য ত্বকের সমস্যা।
- অতিরিক্ত চুল পড়া: চুলের বৃদ্ধি কমে যাওয়া এবং অতিরিক্ত চুল পড়া।
- ক্ষুধামান্দ্য: ক্ষুধামান্দ্য এবং স্বাদ অনুভবের ক্ষমতা কমে যাওয়া।
- বৃদ্ধি কমে যাওয়া: শিশুদের বৃদ্ধি কমে যাওয়া বা বিকাশে বিলম্ব।
- জখম সারাতে সময় লাগা: জখম বা ক্ষত দ্রুত সারে না।
প্রতিদিন কি পরিমাণ জিংক শরীরে প্রয়োজন
শরীরের সুষ্ঠু কার্যক্রমের জন্য প্রতিদিন নির্দিষ্ট পরিমাণ জিংক গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। নিচে বিভিন্ন বয়স ও লিঙ্গ অনুযায়ী দৈনিক জিংকের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হলো:
- শিশু (০-৬ মাস): ২ মিলিগ্রাম
- শিশু (৭-১২ মাস): ৩ মিলিগ্রাম
- শিশু (১-৩ বছর): ৩ মিলিগ্রাম
- শিশু (৪-৮ বছর): ৫ মিলিগ্রাম
- বালক (৯-১৩ বছর): ৮ মিলিগ্রাম
- কিশোর (১৪-১৮ বছর): ১১ মিলিগ্রাম (পুরুষ), ৯ মিলিগ্রাম (মহিলা)
- প্রাপ্তবয়স্ক: ১১ মিলিগ্রাম (পুরুষ), ৮ মিলিগ্রাম (মহিলা)
- গর্ভবতী নারী: ১১-১২ মিলিগ্রাম
- দুগ্ধদানকারী নারী: ১২-১৩ মিলিগ্রাম
উপসংহার
জিংক শরীরের জন্য একটি অত্যাবশ্যক খনিজ, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জিংক সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণের মাধ্যমে আমরা জিংকের অভাবজনিত সমস্যা থেকে রক্ষা পেতে পারি। প্রতিদিনের সুষম খাদ্যতালিকায় জিংক যুক্ত খাবার অন্তর্ভুক্ত করে আপনি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে পারবেন।