তৎসম সন্ধি বাংলা ব্যাকরণে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাংলা ভাষায় শব্দের গঠন এবং পরিবর্তনের ক্ষেত্রে তৎসম সন্ধির ভূমিকা অপরিসীম। তৎসম সন্ধি মূলত দুই বা তার বেশি শব্দের মিলনে নতুন শব্দ গঠনের প্রক্রিয়া।
তৎসম সন্ধির প্রকারভেদ
তৎসম সন্ধি সাধারণত তিনটি প্রধান শ্রেণীতে বিভক্ত করা হয়। এখানে আমরা প্রতিটি প্রকারের বিস্তারিত আলোচনা করব।
১. অবসান সন্ধি
অবসান সন্ধি হলো যখন দুটি শব্দের শেষের কোন একটি বা দুটি ধ্বনি মিলে গিয়ে একটি নতুন ধ্বনির সৃষ্টি করে। উদাহরণস্বরূপ:
- ‘পান’ + ‘নদী’ = ‘পান্নদী’
এখানে ‘ন’ এর অবসান হয়ে নতুন শব্দ গঠন হয়েছে।
২. লব্ধি সন্ধি
লব্ধি সন্ধি হলো যখন দুটি শব্দের মিলনে একটি শব্দের মধ্যে নতুন অর্থের সৃষ্টি হয়। উদাহরণ হিসেবে:
- ‘বৃষ্টি’ + ‘পানি’ = ‘বৃষ্টিপানি’
এখানে ‘বৃষ্টি’ এবং ‘পানি’ মিলিত হয়ে নতুন শব্দ গঠন করেছে।
৩. প্রত্যয় সন্ধি
প্রত্যয় সন্ধি তখন ঘটে যখন একটি শব্দের শেষে নতুন শব্দ যোগ হয় এবং মূল শব্দের অর্থ পরিবর্তন হয়। যেমন:
- ‘শিক্ষা’ + ‘কর্ম’ = ‘শিক্ষাকর্ম’
এখানে ‘শিক্ষা’ এর সঙ্গে ‘কর্ম’ যুক্ত হয়ে নতুন অর্থ তৈরি হয়েছে।
উপসংহার
তৎসম সন্ধি ভাষার গঠন এবং শব্দ তৈরির ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি কেবল শব্দের সৌন্দর্য বাড়ায় না, বরং ভাষার অর্থ এবং অভিব্যক্তিকে আরও গভীর করে তোলে। তাই বাংলা ভাষার অধ্যয়ন এবং ব্যবহার করার সময় তৎসম সন্ধির ধারণা বুঝে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।
তৎসম সন্ধির এই প্রকারভেদগুলো বুঝে নিয়ে আমরা বাংলা ভাষার প্রতি আরও গভীর আগ্রহ তৈরি করতে পারব।