অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস (Atherosclerosis) হল একটি স্নায়ুবিক অবস্থা যেখানে রক্তনালীতে চর্বি, কোলেস্টেরল, এবং অন্যান্য পদার্থ জমা হতে শুরু করে। এই জমা হওয়া পদার্থগুলিকে প্লাক বলা হয়, যা রক্তনালীকে সংকীর্ণ এবং কঠিন করে তোলে। এর ফলে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হয়, যা হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং অন্যান্য গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।
অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসের কারণসমূহ
অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসের পিছনে বেশ কিছু কারণ কাজ করে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল:
- উচ্চ রক্তচাপ: দীর্ঘকাল ধরে উচ্চ রক্তচাপ থাকা রক্তনালীকে ক্ষতি করে।
- ডায়াবেটিস: উচ্চ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা রক্তনালীকে দুর্বল করে।
- ধূমপান: ধূমপান রক্তনালীর দেওয়ালকে ক্ষতি করে এবং প্লাকের জমাট বাঁধতে সাহায্য করে।
- অস্বাস্থ্যকর খাদ্য: চর্বি ও শর্করা সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণের ফলে কোলেস্টেরলের স্তর বাড়ে, যা প্লাক গঠনে সহায়ক।
অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসের লক্ষণসমূহ
অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসের প্রাথমিক পর্যায়ে সাধারণত কোনো লক্ষণ থাকে না। তবে যখন রক্তনালী যথেষ্ট সংকীর্ণ হয়ে যায়, তখন কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে:
- বুকে চাপ লাগা: হৃদযন্ত্রের রক্ত প্রবাহ কমে গেলে বুকের মধ্যে চাপ অনুভূত হতে পারে।
- শ্বাসকষ্ট: শারীরিক পরিশ্রম করার সময় শ্বাসকষ্ট হতে পারে।
- পা ও হাতের অস্বস্তি: রক্ত প্রবাহ কমে গেলে পা ও হাতের মধ্যে অস্বস্তি অনুভূত হতে পারে।
প্রতিরোধ ও চিকিৎসা
অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে রয়েছে:
- সুষম খাদ্য: ফল, শাকসবজি, এবং সঠিক প্রোটিনের ব্যবহার।
- নিয়মিত ব্যায়াম: সপ্তাহে অন্তত 150 মিনিট কার্ডিওভাসকুলার ব্যায়াম।
- ধূমপান ত্যাগ: ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করা।
- স্বাস্থ্য পরীক্ষা: নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা এবং ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া।
উপসংহার
অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, তবে এটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও নিয়মিত চিকিৎসা নেওয়ার মাধ্যমে এই অবস্থার ঝুঁকি কমানো যেতে পারে। তাই আজ থেকেই সুস্থ থাকার উদ্যোগ নিন!