ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন (FGM) বা নারীর যৌনাঙ্গের অঙ্গচ্ছেদের প্রক্রিয়াকে বোঝায়। এটি সাধারণত সমাজের কিছু অংশে ঐতিহ্যগতভাবে পালন করা হয় এবং এটি নারীদের শরীরের কিছু অংশ অপসারণের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। FGM সাধারণত কৈশোরে বা কিছু ক্ষেত্রে জন্মের পর করা হয় এবং এর প্রভাব শারীরিক এবং মানসিক উভয় দিকেই হতে পারে।
FGM এর প্রকারভেদ
FGM এর প্রধান চারটি প্রকারভেদ রয়েছে, যা নিচে উল্লেখ করা হলো:
- প্রকার I (ক্লিটোরাল উচ্ছেদ): শুধুমাত্র ক্লিটোরিসের অংশ অপসারণ।
- প্রকার II (এক্সিসিয়াল মিউটিলেশন): ক্লিটোরিস এবং ল্যাবিয়া মাইনোরার একটি অংশ অপসারণ।
- প্রকার III (ফ্যালাসিয়াল মিউটিলেশন): ল্যাবিয়া মেজোরার এবং ক্লিটোরিসের সম্পূর্ণ অপসারণ এবং একটি ছোট গর্তের মাধ্যমে মূত্র এবং মাসিক রক্ত বের হওয়া।
- প্রকার IV (অন্য যে কোনও প্রকার): অন্যান্য ক্ষতি, যেমন দাগ, পোড়া, বা অন্যান্য ক্ষতির প্রক্রিয়া।
FGM এর কারণ
FGM এর পিছনে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় কারণ রয়েছে। কিছু সমাজে এটি একটি প্রথা হিসেবে দেখা হয় এবং এটি নারীর ‘শুদ্ধতা’ বা ‘গুণাবলী’ এর সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মনে করা হয়। এছাড়াও, কিছু পরিবার এটি করতে বাধ্য হয় যাতে তারা সমাজে গ্রহণযোগ্যতা পায়।
FGM এর প্রভাব
FGM এর অনেক শারীরিক ও মানসিক প্রভাব রয়েছে। শারীরিক দিক থেকে এটি সংক্রমণ, দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা এবং প্রসবের সময় জটিলতার কারণ হতে পারে। মানসিকভাবে, এটি নারীদের মধ্যে উদ্বেগ, হতাশা এবং PTSD এর সৃষ্টি করতে পারে।
FGM প্রতিরোধের উদ্যোগ
বিশ্বজুড়ে FGM প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি, স্থানীয় এনজিও এবং সরকারগুলি এই প্রথা বন্ধ করার জন্য প্রচার চালাচ্ছে। শিক্ষা, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে FGM এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো হচ্ছে।
উপসংহার
FGM একটি মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং এটি প্রচলিত হওয়া উচিত নয়। এর বিরুদ্ধে সচেতনতা এবং শিক্ষা বৃদ্ধি করা জরুরি, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের প্রথা বন্ধ করা সম্ভব হয়। নারীদের স্বাস্থ্য এবং অধিকার রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব।