অস্টিওপোরোসিস একটি চুপিসারে অগ্রসর হওয়া রোগ যা হাড়ের ঘনত্ব ও গুণমান হ্রাস করে, ফলে হাড়ের ভঙ্গুরতা বৃদ্ধি পায়। এই রোগের ফলে হাড়গুলো দুর্বল হয়ে যায় এবং সাধারণত হাড়ের ভাঙার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এটি বিশেষ করে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়, বিশেষত মহিলাদের মধ্যে, কারণ বয়স বাড়ার সাথে সাথে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে, যা হাড়ের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে।
অস্টিওপোরোসিসের কারণ
অস্টিওপোরোসিসের বিভিন্ন কারণ রয়েছে, এর মধ্যে প্রধান কয়েকটি হলো:
- জেনেটিক ফ্যাক্টর: পারিবারিক ইতিহাস থাকলে এই রোগের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।
- হরমোন পরিবর্তন: মহিলাদের জন্য মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেনের স্তর হ্রাস পায়, যা হাড়ের ক্ষয়কে ত্বরান্বিত করে।
- পুষ্টির অভাব: ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডির অভাব হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
- অ্যাকটিভিটি লেভেল: শারীরিক অকার্যকরতা হাড়ের ঘনত্ব কমাতে পারে।
অস্টিওপোরোসিসের লক্ষণ
অস্টিওপোরোসিস সাধারণত অগ্রসর হওয়া পর্যন্ত লক্ষণ প্রকাশ করে না। তবে কিছু লক্ষণ যেমন:
- হাড়ের ব্যথা
- ভঙ্গুর হাড়
- উচ্চতা হ্রাস
- মেরুদণ্ডের অস্বাভাবিক বাঁকা হওয়া
রোগটি কীভাবে নির্ণয় করা হয়
অস্টিওপোরোসিস নির্ণয়ের জন্য ডাক্তার সাধারণত ডুয়াল-এনার্জি এক্স-রে অ্যাবসর্বশন (DEXA) স্ক্যান ব্যবহার করে। এই পরীক্ষাটি হাড়ের ঘনত্ব পরিমাপ করতে সহায়তা করে।
প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা
অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে:
- সঠিক পুষ্টি: ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা।
- নিয়মিত ব্যায়াম: শক্তি এবং ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- ধূমপান এবং অ্যালকোহল পরিহার: যা হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
চিকিৎসা
যদি রোগটি নির্ণীত হয়, তবে চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন ওষুধ এবং থেরাপি রয়েছে, যেমন:
- বিসফোসফোনেট: হাড়ের ক্ষয়কে কমাতে সাহায্য করে।
- হরমোন থেরাপি: মহিলাদের জন্য ইস্ট্রোজেনের স্তর পুনরুদ্ধার করতে।
অস্টিওপোরোসিস একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা, তবে সচেতনতা ও সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে এ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।