তাহাজ্জুদ নামাজ ইসলামের একটি বিশেষ নফল নামাজ, যা রাতে গভীর নিদ্রা ভেঙে আল্লাহর ইবাদতের জন্য পড়া হয়। নিচে বিস্তারিতভাবে তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ম উল্লেখ করা হলো:
তাহাজ্জুদ নামাজের সময়:
- তাহাজ্জুদ নামাজের সময়: ইশার নামাজের পর থেকে ফজরের আজান পর্যন্ত।
- সেরা সময়: রাতের শেষ তৃতীয়াংশ, যা ফজরের আজানের আগে।
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়ত:
নামাজ শুরুর আগে নিয়ত করতে হয়। কর্তব্য হচ্ছে মনে মনে নিয়ত করা। নিয়ত বলতে পারেন:
- “আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে তাহাজ্জুদ নামাজের দুই রাকাত আদায় করছি।”
তাহাজ্জুদ নামাজের রাকাত সংখ্যা:
- তাহাজ্জুদ নামাজ নফল হওয়ার কারণে এতে রাকাত সংখ্যা স্থির নয়। তবে সাধারণত ২, ৪, ৬, ৮, বা ১২ রাকাত পড়া হয়।
- প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাঃ) সাধারণত ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ নামাজ পড়তেন এবং সাথে ৩ রাকাত বিতির নামাজ।
তাহাজ্জুদ নামাজের পদ্ধতি:
প্রথমে ২ রাকাত নামাজ আদায় করার নিয়ম:
- নিয়ত করুন: ঃ মুখে নিয়ত বলতে পারেন – "নাওয়াইতু আন উসাল্লিয়া লিল্লাহি রহিমা রাখাতাই তাহাজ্জুদ নাফলি লিল্লাহি তাআ’লা আল্লাহু আকবার।"
- তাকবির তেহরিমা দিয়ে নামাজ শুরু করুন।
- সানা পড়ুন: "সুবহানাকা আল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা"
- সূরা ফাতিহা এবং কোনো সূরা ক্বিরাত হিসেবে পড়ুন।
- রুকু, সিজদা সম্পন্ন করে দ্বিতীয় রাকাতে উঠুন। আবার সূরা ফাতিহা পড়ুন এবং অন্য সূরা/আয়াত পড়ুন।
- তাশাহুদের জন্য বসুন এবং যথাযথ দোয়া পড়ুন।
- প্রথম দু’রাকাত শেষে সালাম ফিরিয়ে নামাজ শেষ করুন।
এসমই এই প্রক্রিয়া পুনরাবৃত্তি করুন যতক্ষণ তাহাজ্জুদ নামাজ পূর্ণ করবেন।
বিপদাপন্ন ব্যক্তিদের জন্য সাধারণ নিয়ম:
- কাকে হলে বসে বসে তাহাজ্জুদ পড়তে পারবেন।
- যে কোন মুসুল্লী নিজের শারীরিক সক্ষমতা অনুযায়ী তাহাজ্জুদ নামাজের সংক্ষিপ্ত বা দীর্ঘ করতে পারেন।
দুআ ও ইস্তিগফার:
- তাহাজ্জুদ নামাজের পর ইস্তিগফার, দরূদ ও নিজের প্রয়োজনীয় দোয়া করুন।
- মনোর্থনা করে বিশেষ দোয়া করুন; রাতে আল্লাহ উত্তর দেন বলে বিশ্বাস করা হয়।
তাহাজ্জুদ নামাজের প্রতি মনোযোগ ও শ্রদ্ধা রেখে আদায় করতে হবে এবং আল্লাহর আরাধনা করার সুযোগ হিসেবে এটি নেওয়া উচিত। আশা করি এই নির্দেশনা আপনার জন্য সহায়ক হবে। আল্লাহ আমাদের ইসলামের পথে চালিত করুন। আমীন।