সুরা কাফিরুন (আরবি: سورة الكافرون) পবিত্র কুরআনের ১০৯ নম্বর সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং এতে মোট ৬টি আয়াত রয়েছে। এই সুরাটি আল্লাহর প্রতি অঙ্গীকার এবং অবিশ্বাসীদের থেকে আলাদা থাকাকে প্রকাশ করে। সুরা কাফিরুন তাওহিদের বার্তা প্রচার করে এবং মুসলমানদের অন্য ধর্মের অনুসারীদের ধর্মীয় কাজে অংশগ্রহণ না করার নির্দেশ দেয়। এটি মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুরা, যা তাদেরকে ঈমানের পথে অটল থাকতে উৎসাহিত করে। নিচে সুরা কাফিরুন-এর আরবি, বাংলা উচ্চারণ এবং বাংলা অনুবাদ দেওয়া হলো:
সুরা কাফিরুন-এর আরবি:
بِسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ
قُلْ يَا أَيُّهَا الْكَافِرُونَ
لَا أَعْبُدُ مَا تَعْبُدُونَ
وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ
وَلَا أَنَا عَابِدٌ مَّا عَبَدتُّمْ
وَلَا أَنتُمْ عَابِدُونَ مَا أَعْبُدُ
لَكُمْ دِينُكُمْ وَلِيَ دِينِ
বাংলা উচ্চারণ:
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
কুল ইয়ায়্যুহাল কাফিরুন।
লা আ’বুদু মা তা’বুদুন।
ওয়ালা আনতুম আ’বিদুনা মা আ’বুদ।
ওয়ালা আ’না আ’বিদুম মা আ’বাত্তুম।
ওয়ালা আনতুম আ’বিদুনা মা আ’বুদ।
লাকুম দীনুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন।
বাংলা অনুবাদ:
আল্লাহর নামে শুরু করছি, যিনি পরম করুণাময়, অতি দয়ালু।
বলুন, “হে কাফিরগণ!
আমি এবাদত করি না যা তোমরা উপাসনা কর।
তোমরাও এবাদতকারী নও যা আমি উপাসনা করি।
আমিও এবাদতকারী নই যা তোমরা উপাসনা করেছ।
তোমরাও এবাদতকারী নও যা আমি উপাসনা করি।
তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্ম, আমার জন্য আমার ধর্ম।”
সুরার তাৎপর্য:
সুরা কাফিরুন ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটায়। এটি মুসলমানদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয় যে তাদের বিশ্বাস এবং উপাসনা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য এবং অন্য ধর্মের অনুসারীদের সাথে আপস করা উচিত নয়। এই সুরা মুসলমানদেরকে ঈমানের পথে স্থির থাকতে এবং অন্য ধর্মের প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে উৎসাহিত করে। এটি একটি সুস্পষ্ট ঘোষণা যে, ধর্মীয় ক্ষেত্রে আপস বা সমঝোতা করা ইসলামে স্থান পায় না। সুরাটি ছোট হলেও এর তাৎপর্য গভীর এবং এটি মুসলমানদের দৈনন্দিন জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
উপসংহার:
সুরা কাফিরুন মুসলিম উম্মাহর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা বহন করে। এটি আমাদের শিখায় কিভাবে ঈমানের পথে দৃঢ় থাকতে হয় এবং অন্য ধর্মের প্রভাব থেকে নিজেদের রক্ষা করতে হয়। সুরাটি আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে, আমাদের বিশ্বাস এবং উপাসনা শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য এবং আমাদের উচিত ধর্মীয় বিষয়ে কোনো ধরনের আপস না করা। সুরা কাফিরুন প্রতিদিনের নামাজে পাঠ করলে আমাদের ঈমান আরও মজবুত হয়।